আপনার কনটেন্ট প্ল্যান করুন
সফল যোগাযোগের জন্য আপনার অনলাইন কনটেন্ট নিয়ে পরিকল্পনা করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার কনটেন্ট ম্যানেজ করা ও আপ-টু-ডেট রাখার কিছু পরামর্শ দেয়া হলো।
হতে পারে আপনি সবেমাত্র সোশ্যাল মিডিয়াতে শুরু করছেন এবং আপনাকে অনেক কিছু করতে হবে এবং সব সময় পর্যবেক্ষণ করতে হবে এই ব্যাপারে অনেক ভীত হচ্ছেন। অথবা আপনি সম্ভবত নিজের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে এতো এতো পোস্ট করতে হবে এবং তার জন্য আপনাকে অনেক তথ্য নিয়ে কাজ করতে হবে এ ব্যাপারে চিন্তা করে অনেক ক্লান্তি অনুভব করছেন।
থামুন। একটি ভাল উপায় আছে। সফলতার জন্য অনুসরণ করার মত এখানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ এবং সেগুলোর প্রস্তুতির জন্য কয়েকটি কার্যকর লিঙ্ক আছে।
ধারাবাহিক থাকুন
এটা হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্ষেত্রে মনে রাখার জন্য অন্যতম একটি মূল বিষয়। অনেক বেশি পোস্ট কিছু মানুষের কাছে বিরক্তিকর মনে হতে পারে এবং আপনি নতুন কিছু শেয়ার করছেন না দেখে তারা হয়তো আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে। বিকল্প হিসেবে, এক সপ্তাহে অনেক পোস্ট করে পরবর্তী দুই মাস আর কিছু পোস্ট করলেন না- এমনটা করবেন না। আপনার অডিয়েন্সের ওয়ালে অনেক তথ্য রয়েছে। আপনার কনটেন্ট সেখানে নিয়মিত পপ-আপ হওয়া উচিত যেন মানুষজন প্রায়ই সেটা দেখে ও আপনার কথা মনে রাখতে পারে।
আপনার পোস্ট করার সময়সূচীতে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করুন যা আপনার কমিউনিকেশনের জন্য অর্জনযোগ্য ও কার্যকর। এখানে ট্রায়াল ও এরর এর ব্যাপার আছে। কিন্তু আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মেট্রিক্স আপনাকে জানিয়ে দিবে কোন পোস্টটি কোন সময়ে দেয়া সবচেয়ে বেশী কার্যকর। আপনার অডিয়েন্স কোন সময়ে সবচেয়ে বেশী অনলাইনে থাকে তা জেনে সেই সময়গুলোতেই পোস্ট করুন। এটি আপনাকে একটি কার্যকর পোস্টিং প্যাটার্ন তৈরিতে সাহায্য করবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার উপস্থিতির একটি ধারাবাহিক লুক, ফিল, এবং কঠস্বর থাকাটাও প্রয়োজন। এটি অনলাইনে আপনার সংস্থার পরিচয় প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করবে এবং মানুষ আপনার সংস্থাকে আরো বেশী মনে রাখবে। এটা সম্পর্কে আরও পড়ুন এখানে.
গুণগত মানকে গুরুত্ব দিন, পরিমাণ নয়।
আপনি পারবেন তাই বলে ২৪ ঘন্টা আপনার পোস্ট করার দরকার নেই। এর চেয়ে বরং মানসম্পন্ন কনটেন্ট পোস্ট করার চেষ্টা করুন। প্রতিদিন নিম্নমানের কনটেন্ট পোস্ট করার চেয়ে সপ্তাহে বরং একটি মানসম্পন্ন পোস্ট করা ভাল। আপনার শ্রোতাদের জন্য আপনার কনটেন্টে মূল্যবান কোনো কিছু যদি না থাকে তাহলে তারা আগ্রহী হবেন না। সর্বদা আপনার যোগাযোগ কৌশল অনুসরণ করুন এবং নিয়মিত আপনার শ্রোতাদের যুক্ত রাখতে আপনার মূল বার্তাটিতে ফোকাস দিন। কী করলে তাদের মনোযোগ আকর্ষিত হবে এবং একই সাথে আপনার সংস্থার লক্ষ্যগুলো সম্পর্কে মানুষ জানতে পারবে?
আপ টু ডেট থাকুন
বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া/সামাজিক মাধ্যম নেটওয়ার্ক নিয়মিত তাদের পোস্টের জন্য প্রয়োজনীয় লেআউট স্পেসিফিকেশন পরিবর্তন করে থাকে। এর অর্থ আপনাকে ফরম্যাটের ব্যাপারে আপ টু ডেট থাকতে হবে যেন আপনি সেই হিসেবে পোস্ট করতে পারেন এবং এটা নিশ্চিত করুন যে আপনি যেভাবে চেয়েছিলেন আপনার কনটেন্টটি সেভাবেই প্রকাশিত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আকারের নিয়মিত আপডেটেড গাউড পেতে এখানে ক্লিক করুন।
এছাড়াও অন্যরা কি পোস্ট করছে সে ব্যাপারেও আপ টু ডেট থাকুন। আপনার সংস্থার মত একই রকম সংস্থাগুলো থেকে শিখুন এবং অনুপ্রেরণা ও কন্টেন্টের ব্যাপারে পরামর্শের জন্য অন্যত্র শীর্ষস্থানীয় সংস্থাগুলোকে অনুসরণ করুন। তারা তাদের অডিয়েন্সের সাথে কী রকম কথাবার্তা বলছেন?
বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট পোস্ট করুন
আপনার পোস্ট করা কনটেন্ট এর ধরন ভিন্ন করুন। এটা শুধু নির্মাতা হিসবে আপনার জন্য আকর্ষনীয় হবে তা নয় বরং আপনার অডিয়েন্সকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করবে। আপনি তাদের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষন করতে এবং কোনটি সবচেয়ে ভালো কাজ করে তাও দেখতে পারবেন। কিছু ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট হতে পারে:
শিডিউলিং
এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যখন আপনার কনটেন্টটি পরিকল্পনা করেন ও শিডিউল করেন তখন এটি আপনাকে এগিয়ে যেতে ও পোস্ট নিয়ে যত্নসহকারে ভাবতে সহায়তা করবে। আপনি তুলনামূলক কম চাপ অনুভব করবেন এবং শেষ মূহুর্তে অপ্রস্তুত কন্টেন্ট পোস্ট করার পরিমাণ কমবে।
পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে আপনার পোস্ট নিয়ে আপনার আরও বেশী কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হবে। ফলে আপনি আপনার যোগাযোগের উদ্দেশ্যের উপর ফোকাস করতে পারবেন, যৌক্তিক ক্রমানুসারে তথ্য প্রকাশ করতে পারবেন এবং পুনরাবৃত্তি এড়াতে পারবেন।
আপনার অডিয়েন্স কখন সবচেয়ে বেশী অনলাইনে থাকে সেটা জানতে হবে। এটি কি তারা যখন ঘুম থেকে উঠে তখন, মধ্যাহ্নভোজের সময়, নাকি যেকোনো সময়? তাদের লাইফস্টাইল নিয়ে ভাবুন এবং কখন তারা আপনার ম্যাসেজ পড়ে দেখতে সেটা বিবেচনায় নিন। তাদের জন্য আপনার পোস্টটি শিডিউল করুন।
পরামর্শ
আপনি কি জানতেন যে আপনি আপনার সর্বশেষ Facebook পোস্ট, Instagram ফটো, এবং ট্যুইট একসাথে প্রকাশ করতে পারেন? সেটার জন্য একটি টুল আছে।
সোশ্যাল মিডিয়া শিডিউলিং টুলস
আপনি একটি বা অনেকগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম যেটাই ব্যবহার করেন না কেন, সোশ্যাল মিডিয়া শিডিউলিং টুলস আপনার যোগাযোগ প্রচেষ্টাকে সাজাতে পারে। এতে আপনি আপনার কনটেন্ট নিয়ে পরিকল্পনা করতে পারবেন, ছবি এবং লোগো এর মত সৃজনশীল জিনিসগুলো ম্যানেজ করতে পারবেন, সবচেয়ে ভাল সময়ের জন্য পোস্ট শিডিউল করতে পারবেন এবং আপনার অগ্রগতিও ট্র্যাক করতে পারবেন।
এই টুলগুলো আপনাকে টিম মেম্বারদের/দলের সদস্যদের সাথে একত্রে কাজ করতে এবং কাজের প্রবাহ ঠিক রাখতে সহায়তা করবে। আপনি পোস্টগুলোর খসড়া তৈরি করতে পারেন এবং অন্যরা মন্তব্য প্রদানের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় অবদান রাখতে পারবে। এটি বিশেষভাবে কাজ দেয় যদি আপনি একই জায়গায় বা টাইম-জোনে না থাকেন। পরিশেষে, এই টুলগুলো কার্যকারিতা উন্নত করে সময় বাঁচায়, যেন আপনি কৌশলগত হওয়ার প্রতি ও আপনার অডিয়েন্সের সাথে সংযুক্ত হওয়ার নতুন নতুন উপায় বিকাশ করার প্রতি ফোকাস করতে পারেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্ল্যাটফর্মের মত, সবসময় নতুন নতুন শিডিউলিং টুল তৈরি হচ্ছে। আপ টু ডেট থাকার জন্য শুধু অনুসন্ধান/সার্চ করুন [social media scheduling tool] এবং একাধিক টুলের পর্যালোচনা দেখুন। তারপর কোনটি আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সেটা স্থির করুন।
শেষ কথা হল, সর্বদা নতুন নতুন টুলস, আপনার শ্রোতাদের সাথে যুক্ত হওয়ার নতুন নতুন উপায় এবং আপনার লক্ষ্যকে আরো এগিয়ে নেওয়ার জন্য নতুন নতুন ধারণা সম্পর্কে শিখতে থাকুন। আপনি কী করতে পারেন তা জানতে আপনার নেটওয়ার্ক ও বিস্তৃত ইন্টারনেটে যুক্ত হতে থাকুন।
সহায়ক রিসোর্সসমূহ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আকার সম্পর্কে আপ-টু-ডেট তথ্য পেতে চেক করুন: https://sproutsocial.com/insights/social-media-image-sizes-guide/
জরিপ, পোল, প্রশ্নপত্র তৈরি করুন: https://www.surveymonkey.com/curiosity/topic/polling/
প্রেজেন্টেশন তৈরি করুন: https://www.slideshare.net
বিভিন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করার টেমপ্লেট: https://www.canva.com/templates/