সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মেট্রিকস বোঝা

একটি সফল অনলাইন কমিউনিটি তৈরি করতে আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টে কোন জিনিসটি কীভাবে মনিটর করবেন তা বুঝুন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম/সোস্যাল মিডিয়া হলো-সামাজিক! ঠিক যেমনটি বলা হয়। পোস্ট প্রদানকারী, তাদের অডিয়েন্স এবং অডিয়েন্সের মধ্যে যারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করেন তাদের মধ্যকার কথোপকথন এবং আলাপচারিতার উপর এটি নির্ভর করে। 

ব্যাপারটি এরকম নয় যে আপনি দেয়ালে একটি পোস্টার লাগিয়ে সেটা পথচারীদের দেখার জন্য উন্মুক্ত করে দিলেন। আপনার পোস্টে লোকজন কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে সেটা চেক করতে হবে এবং আপনার পেজের ভিজিটরদের সাথে আলোচনায় সম্পৃক্ত হতে হবে। আপনাকে সামাজিক হতে হবে! শুধুমাত্র কিছু একটা কিছু পোস্ট করেই চলে যাবেন না। একটি সফল কমিউনিটি তৈরি করার লক্ষ্যে আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলো মনিটর করতে হবে এবং আপনার অডিয়েন্সের সাথে আলাপচারিতায় সম্পৃক্ত হতে হবে। 

পোস্টার অ্যানালজিটি দেখুন। আপনি সঠিক জায়গায় আপনার পোস্টারটি লাগালে আপনি যেসব মানুষদেরকে দেখাতে চান সেসব মানুষজন এটা দেখতে পারবে। তারা পোস্টারের সামনে দিয়ে হেঁটে যেতে পারে। এটা যদি কোনো ব্যস্ত কোন স্থানে হয় তবে অন্যান্য আরো মানুষজনও এটা দেখতে পারবে। তবে আপনি সেখানে সারাদিন বসে না থাকলে এবং কে কে হেঁটে যাচ্ছেন তা না দেখলে আপনি কখনো জানতে পারবেন না যে কে কে আপনার পোস্টার দেখেছে। 

কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ফলে আপনার পোস্টটি যারা দেখছেন তাদের সাথে আপনি অনলাইন আলাপ করতে পারবেন। আপনার পোস্টগুলো কে কে দেখছেন এবং তারা পোস্টগুলোর সাথে কতটা ভালোভাবে সম্পৃক্ত হচ্ছেন সেটা পরিমাপ ও বিশ্লেষণ করার টুলও আপানার হাতের নাগালেই আছে। সময়ের সাথে সাথে এই তথ্যগুলো ট্র্যাকও করা যায় যা আপনার যোগাযোগের কার্যকরিতা ও ডোনার রিপোর্টিং এর জন্য আপনার প্রকল্পের অগ্রগতি মূল্যায়নের জন্য খুবই দরকারী।

বিশ্লেষণ

এটি আপনার সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কনটেন্টের পার্ফরমেন্স সম্পর্কিত ডেটা একত্র করা এবং অডিয়েন্স কীভাবে কনটেন্টটির সাথে যুক্ত হচ্ছে তা বিশ্লেষণ করার পদ্ধতি। এই তথ্যগুলো বিশ্লেষন ও উপস্থাপন করার জন্য বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন উপায় রয়েছে। এগুলো বিনামূল্যে বিভিন্ন পরিমাণে তথ্যও সরবারহ করে থাকে। আপনার পছন্দের প্ল্যাটফর্মটি কী অফার করে তা খুঁজে দেখুন এবং সেটার সর্বোচ্চ সুবিধা কিভাবে নেওয়া যায় তা জানতে শুরু করুন। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশ্লেষণ করার জন্য বিভিন্ন উপায় রয়েছে। শুধুমাত্র এক ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মেট্রিক (অথবা ডেটা) দেখবেন না। কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এটি দেখলে আপনি একটি পুরো চিত্রটি বুঝতে পারবেন। কী দেখবেন সে সম্পর্কে কিছু মূল শর্ত এবং সংখ্যা দেওয়া হলো। 

ফলোয়ার অথবা ফ্যান

এটি একটি সাধারণ এবং স্পষ্ট মানদণ্ড যা আপনি এবং অন্যরা সহজেই দেখতে পাবেন। এই সংখ্যাটি বৃদ্ধি পেলে ভালই লাগে, তবে আপনি আসলে যতটা ভাল মনে করছেন ততটা অর্থবহ নয়। আপনি কি জানেন যে, আপনি চাইলে সোশ্যাল মিডিয়াতে/সামাজিক মাধ্যমে ফলোয়ার কিনতে পারেন? কিছু কিছু ব্যবহারকারী তেমনটাই করে থাকে। তবে আমরা আপনাকে তেমনটা করতে বলছি না। ফলোয়ার সংখ্যাই আসলে সব নয়, তবে ফলোয়ারদের ধরন গুরুত্বপূর্ণ—ফলোয়ার বলতে সেই সব ব্যক্তিদের বুঝানো হয় যারা আপনার কনটেন্টের ব্যাপারে আগ্রহী এবং যারা লাইক দিয়ে, মন্তব্য করে বা শেয়ার করার দ্বারা আপনার কনটেন্টে নিজেদেরকে কতটুকু সম্পৃক্ত রাখে। 

সম্পৃক্ততা

সাফল্যের মানদন্ড হিসেবে আপনার বরং এটিই দেখা উচিত। আপনার অডিয়েন্স আপনার পোস্টে কেমন সাড়া দিচ্ছে সেটা সম্পর্কে আপনাকে জানায়। মানুষ আপনার সংস্থার সাথে অনলাইনে কেমন মত বিনিময় করছে এবং আপনার কমিউনিটির সাথে আপনার আলাপচারিতা কেমন হচ্ছে সেই ব্যাপারে এটি আপনাকে তথ্য দেয়। এটি আপনাকে এ তথ্যও দিতে পারে যে কোন ধরনের কনটেন্টগুলো তাদের কাছে আকর্ষনীয়। চ্যানেলের উপর ভিত্তি করে সম্পৃক্ততা ভিন্নভাবে পরিমাপ করা যেতে পারে, কিন্তু মূলনীতি হলো:

গড় সম্পৃক্ততার হার = সম্পৃক্ততা কার্যক্রমের সংখ্যা (কমেন্ট, লাইক, শেয়ার) ÷ মোট ফলোয়ার সংখ্যা

পরিবর্তন 

আপনার কনটেন্টের কার্যকারিতা নিরূপণ করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি আপনার শ্রোতাদের কাছ থেকে যা আশা করছেন তারা কী সেটি করছেন? তারা কি আপনার পোস্টের কোনো কল-টু-অ্যাকশন, যেমন ফাইল ডাউনলোড করা, ভিডিও দেখা, ইমেইল তালিকার জন্য সাইন আপ করা বা সমীক্ষায় ভোট দেওয়ার মত সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে ক্লিক করছেন? 

এটি সম্পর্কে এভাবে চিন্তা করুন:

পরিবর্তনের হার = কনটেন্ট দেখা, ক্লিক করা বা ডাউনলোডকারীর সংখ্যা ÷ মোট ভিজিটর সংখ্যা

শীর্ষ টিপস: অতিরিক্ত তথ্য দেয়া পরিহার করুন।

১. আপনার কাছে যে তথ্য আছে সেগুলো আপনাকে কীভাবে সাহায্য করতে পারে তা বিবেচনা করুন।

২. এটি কি কোন কনটেন্টটি মানুষ তুলনামূলকভাবে বেশী পছন্দ করেছে সে ব্যাপারে কি আপনাকে জানাতে পারে?

৩. আপনার কনটেন্ট পোস্ট করার সর্বোত্তম সময় কোনটি সে সম্পর্কে জানাতে পারে?

৪. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার কার্যক্রম কমিউনিটি তৈরি ও সম্পৃক্ত করে কিনা সে ব্যাপারে তথ্য দেয়?

সোশ্যাল মিডিয়া/সামাজিক মাধ্যম পরিচালনা করা একটি দক্ষতা বটে এবং দিনে দিনে আপনাকে এই দক্ষতার পরিমার্জন করতে হবে। মূল বিষয় হল আপনাকে আপনার শ্রোতাদের সাথে মিশতে হবে এবং তাদেরকে আপনার কনটেন্টে সম্পৃক্ত করতে হবে এবং তারা কোন ধরনের কনটেন্টে সাড়া দেন এবং কীসে সাড়া দেননা তা আপনাকে গবেষণা করতে হবে। এছাড়াও, আপনাকে সামাজিক হতে হবে! আপনার শ্রোতাদের সাথে যুক্ত থাকতে আপনার অ্যাকাউন্টে নিয়মিত নতুন নতুন ও প্রাসঙ্গিক কনটেন্ট নিয়ে আসুন। মানবিক সম্পর্ক বজায় রাখার সাথে তুলনা করুন। মনে রাখবেন, এটিও শুধুমাত্র যোগাযোগ, কিন্তু ধরনটি আলাদা। 

প্রয়োজনীয় রিসোর্সসমূহ 

প্রতিটি সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্কের জন্য কী কী বিশ্লেষণমূলক টুল ফ্রি পাওয়া যায় তা অন্বেষণ করুন। উদাহরণস্বরূপ, আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য যদি কোনো ফেসবুক পেজ থাকে তাহলে আপনার ফেসবুক পেজ ইনসাইট (Facebook’s Page Insights) থেকে দরকারী তথ্য পেতে পারেন। এই ফাংশনটি “আপনার পেজের কার্যকারিতা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করতে পারে যেমন আপনার শ্রোতাদের ডেমোগ্রাফিক ডেটা কী এবং লোকজন কীভাবে আপনার পোস্টগুলোতে প্রতিক্রিয়া জানায় এই ধরনের বিষয়ে।”

ফেসবুকের মাধ্যমে আমাদের কমিউনিটির সাথে যুক্ত থাকুন

সক্রিয় থাকুন এবং আমাদের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে আমাদের বৃহত্তর কমিউনিটির সাথে যুক্ত থাকুন।

Go to Facebook