একটি ভালো অনলাইন কনটেন্ট কীভাবে তৈরি করা যায়

একটি ভালো কনটেন্ট কীভাবে তৈরি করা যায় যা অন্যদের চেয়ে আলাদা হবে।

প্রযুক্তি কনটেন্ট নির্মাণে গণতন্ত্র নিয়ে এসেছে। যে কেউ এখন অনলাইনে এসে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই প্রকাশক হতে পারে। বিশ্বে ডেটা/উপাত্তের পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে। একই সময়ে আমরা সবাই একাধিক উৎস থেকে তথ্য পেয়ে একরকম তথ্যের সাগরে ভাসছি এবং আমাদের মনোযোগের ব্যাপ্তিও সংকুচিত হচ্ছে। কে এখন আর পত্রিকার কোনো দীর্ঘ লেখা পড়ে? 

আপনি প্রকৃতপক্ষে কোনো পার্থক্য গড়তে চাইলে আপনার কনটেন্টটি মানুষের নজরে আসতে হবে। আপনার শ্রোতারা প্রতিনিয়ত প্রচুর পরিমাণে যে তথ্য গ্রহণ করছে সেগুলোর চেয়ে আপনার তথ্য আলাদা হতে হবে। একটু ভেবে দেখুন- প্রতিদিন আপনি কত শত ম্যাসেজ পাচ্ছেন। আপনি কি যত্নসহকারে সবকিছু পড়েন? কোন জিনিসটি আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করে? ভাল কনটেন্ট তৈরির জন্য এখানে কয়েকটি প্রয়োজনীয় টিপস আছে যা আপনার কনটেন্টকে অতুলনীয় করতে সহায়তা করতে পারে। 

সবসময় চেষ্টা করুন প্রথমেই যেন একটি চমৎকার ইম্প্রেশন তৈরি করা যায়।

বাস্তব জীবনের মতো অনলাইনেও প্রথম ইম্প্রেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনার সোস্যাল মিডিয়া পেইজগুলোতে প্রথমবার আসা ভিজিটরদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনার সকল যোগাযোগ আপনার সংস্থার সাথে সংযুক্ত করতে আপনার সকল সোস্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের কাভার ফটো ও অ্যাবাটারগুলো যেন দেখতে যথাসম্ভব আকর্ষনীয় ও সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তা নিশ্চিত করুন। 

আপনি আপনার কাভার ফটো খালি রাখতে পারেন অথবা যেকোনো সলিড কালার ব্যবহার করতে পারেন। আপনি একাধিক ছবিও আপলোড করতে পারেন। আপনার সংস্থার জন্য একটি শক্তিশালী লুক ও ধারণা তৈরি করতে অনেকগুলো ভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নেটওয়ার্কের জন্য DIY টেমপ্লেট এখানে বাছাই করুন। ব্যানার, হেডার, কভার আর্ট, এবং আরও অনেক কিছু ডিজাইন করতে আপনার নিজস্ব ছবি ব্যবহার করুন অথবা লাইব্রেরিতে ইমেজ নির্বাচন করুন।

ব্র্যান্ডিং করুন

কিছু কিছু লোক ব্র্যান্ডিংকে বিরক্তিকর এমনকি চাতুর্যতা হিসেবে দেখেন যেমনটি বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্য কেনার জন্য আমাদের বোকা বানাতে ব্যবহার করে। ব্র্যান্ডিং প্রকৃতপক্ষে খারাপ কিছু না। প্রকৃতপক্ষে এটি একটি টুল মাত্র, যা ভাল বা খারাপ উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা যেতে পারে। কিছু সংগঠন তাদের ফলোয়ারদের আকৃষ্ট করতে এবং তাদেরকে উৎসাহিত করতে এটি অত্যন্ত কার্যকরভাবে ব্যবহার করে থাকে। কমিউনিটির কল্যাণে আপনার বার্তাটি অন্যদের চেয়ে অতুলনীয় করতে আপনি এটি ব্যবহার করতে পারেন। 

আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টের সবকিছু দেখতে একই রকম করুন এবং একই রকম রঙ ও ফন্ট ব্যবহার করে ব্র্যান্ডিং শুরু করুন। আপনার শ্রোতারা কোনটি আপনার ম্যাসেজ/বার্তা সেটা চিনতে শুরু করবে। আপনি যেভাবে কথা বলেন এবং লিখেন সেভাবে ধারাবাহিক থাকুন। এটা আপনার পরিচিতি তৈরি করতে সাহায্য করবে।

আরও তথ্যের জন্য পড়ুন “কেন আপনাকে একটি ব্র্যান্ডের মত করে চিন্তা করতে হবে”।

কনটেন্ট মার্কেটিং পিরামিড ব্যবহার করুন

বই থেকে শুরু করে ট্যুইট পর্যন্ত বিদ্যমান সকল ধরনের কনটেন্ট মাথায় রাখুন। আলাদা পরিস্থিতির জন্য এগুলো উপযুক্ত। প্রতিটি কনটেন্ট তৈরীর পেছনে শ্রম ও খরচের পার্থক্য রয়েছে।

কনটেন্টের ধরন এবং সেগুলো কতবার ব্যবহার করা যাবে এসব ক্ষেত্রে নিমোক্ত কনটেন্ট মার্কেটিং পিরামিড খুব কাজের।

কনটেন্ট পিরামিডটি কিভাবে ব্যবহার করা যায়:

আপনি একটি পিরামিডের যত উপরের দিকে উঠবেন, তত বেশি প্রয়াসের প্রয়োজন। পিরামিডের শীর্ষে থাকা বই ও সাদা কাগজগুলো তৈরি করতে বেশি প্রয়াসের প্রয়োজন হয় এবং সেগুলো পড়তেও দীর্ঘ সময় লাগে। সোস্যাল মিডিয়া পোস্ট বেশী ব্যবহৃত হয় এবং এখানে পোস্ট তৈরি করা খুব সহজ। ব্যয়ও বেশ কম। 

আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি করতে আপনার মূল কনটেন্টটি নিন এবং এটিকে ছোট কনটেন্টে রুপান্তর করুন। 

মূল কনটেন্ট: পিরামিডের শীর্ষ থেকে বিশ্বাসযোগ্য, দীর্ঘ কনটেন্ট যেমন- বই, গবেষণা প্রতিবেদন, ব্লগ পোস্ট, ভিডিও, পডকাস্ট দিয়ে করুন। এটি এমন দীর্ঘ, বিস্তারিত তথ্য যা বিভিন্ন সমস্যার বেশ গভীর পর্যন্ত যায়, যেই সমস্যাগুলোর ব্যাপারে আপনি চান যে মানুষ গ্রাহ্য করুক এবং পদক্ষেপ নিক। তুলনামূলক দীর্ঘ কনটেন্টের লিংক আপনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করতে পারেন। কিন্তু সেই সকল পোস্টগুলোকে আকর্ষণীয় করতে হবে। একটি মনোমুগ্ধকর সারসংক্ষেপ প্রদান করে মানুষজনকে পড়ার জন্য উৎসাহিত করুন।

মাইক্রোকনটেন্ট: আপনার মূল কন্টেন্টকে এমনভাবে পরিবর্তন করুন যাতে তা ছোট, সংক্ষিপ্ত, এবং স্পষ্ট হয়। এমনভাবে তৈরি করুন যাতে লোকজন সহজে ধারণ করতে পারে। মাইক্রোকন্টেন্ট হতে পারে ট্যুইটে সতন্ত্র ব্যক্তির চিন্তা অথবা একক ছবি ব্যবহারের মতো একটি আলাদা কনটেন্ট ।

বিচিত্র কনটেন্ট তৈরি করুন

বার বার একই জিনিস বিরক্তিকর হয়ে থাকে, তাই না? মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্টে ব্যবহার করুন।

  • একটি ক্যাম্পেইন বা প্রোজেক্টের প্রচারণা 
  • আসন্ন ইভেন্টসমূহ 
  • প্রভাব এবং সাফল্যের গল্প 
  • বিভিন্ন সুবিধাভোগীদের মন্তব্য এবং প্রশংসা 
  • সংস্থার সংস্কৃতি এবং গল্পসমূহ 
  • দলের সদস্য অথবা স্বেচ্ছাসেবীদের গল্পসমূহ 
  • সাম্প্রতিক ঘটনাবলী (মীমস এবং জিআইএফ সহ) 
  • সহায়ক রিসোর্সের লিংক 
  • প্রতিবেদন এবং গবেষণার ফলাফল

চিন্তা করুন যে আপনি কী কনটেন্ট তৈরি করতে চান

সর্বদা আপনার মূল বার্তাটি মনে রাখবেন। আপনি আপনার শ্রোতাদের কী বলতে চান? আপনি বিভিন্ন টুল ব্যবহার করে বিভিন্ন উপায়ে তাদেরকে আপনার কথা জানাতে পারেন; তবে আপনি কী বলতে চান তা ভুলে যাবেন না। আপনার সংস্থার মূল বিষয়ে গুরুত্বারোপ করুন। উদাহরণস্বরুপ, একটি ঘৃণা-বিরোধী-বক্তব্যের ফেইসবুক পেজে একটি কিউট বিড়ালের ছবি মানাবে না, যদিনা বিড়ালটি সংশ্লিষ্ট কোনো ম্যাসেজ দেয়!

ফেসবুকের মাধ্যমে আমাদের কমিউনিটির সাথে যুক্ত থাকুন

সক্রিয় থাকুন এবং আমাদের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে আমাদের বৃহত্তর কমিউনিটির সাথে যুক্ত থাকুন।

Go to Facebook