আমি কিভাবে জানবো যে আমি একটি পার্থক্য তৈরি করেছি?

কীভাবে আপনার কাজ অভীষ্ট দর্শক/শ্রোতাদের প্রভাবিত করে সেটা আপনার জানা প্রয়োজন। এখানে ফলাফল মূল্যায়নের ব্যাপারে আরও পড়ুন।

একটি মূল্যায়নের চারটি মূল ধাপ রয়েছে: ডিজাইন, ডেটা সংগ্রহ, ডেটা বিশ্লেষণ এবং ফলাফল উপস্থাপন।

১. আপনার মূল্যায়নটি ডিজাইন করুন

যখনই সম্ভব তখনই আপনার মূল্যায়নে দুটি মূল উপাদান অন্তর্ভুক্ত করতে হবে: পোস্ট করার পূর্বের কর্মসূচি এবং তুলনা গ্রুপ

পোস্ট করার পূর্বের কর্মসূচির ধারণাটি বেশ সহজ। উদাহরণস্বরুপ, আপনি যদি জানতে চান যে আপনার ডায়েট ঠিক মত কাজ করেছে কিনা, তাহলে আপনি ডায়েটের পূর্বে ও পরে আপনার ওজন পরিমাপ করে থাকেন। তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার ওজন পরিবর্তিত হয়েছে কিনা। একইভাবে, অভিবাসীদের প্রতি ঘৃণা হ্রাস করার জন্য Facebook-এ আপনার কর্মসূচি কাজ করেছে কিনা তা জানতে চাইলে আপনার কর্মসূচির আগে ও পরে বৈষম্যের মাত্রা পরিমাপ করতে হবে এবং পার্থক্যগুলো পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

তুলনা গ্রুপগুলো সেই সকল মানুষদের নিয়ে সংগঠিত হয় যারা আপনার প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেননি। তাদের কাছ থেকে ডেটা সংগ্রহ করাটাও, আপনি প্রোজেক্ট পরিচালনা না করলে কী হতো তা চেক করতে দেয়

তুলনা করার গ্রুপগুলো আপনাকে অন্যান্য জিনিস নিয়ন্ত্রণ করতে দেয় যেগুলো আপনার প্রোগ্রামকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরুপ: Facebook-এ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিষ্ণুতা বৃদ্ধি করার জন্য আপনার ইন্টারভেনশন চলাকালীন সময়ে, যদি ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোনো সদস্য একজন স্থানীয় মেয়ের বিরুদ্ধে কোনো ঘৃণ্য অপরাধ করে থাকে, তাহলে? এটা খুবই স্পষ্ট যে, এই কর্মকান্ড এবং এই বিষয়ে গণমাধ্যমের আলোচনা, Facebook-এ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি অসহিষ্ণুতা বাড়িয়ে দিবে। এই ক্ষেত্রে, কোনো তুলনা করার গ্রুপ থাকাটাই একমাত্র উপায় যার মাধ্যমে আপনার প্রোগ্রামের উপর যে প্রভাব পড়ে তা আপনি পরিমাপ করতে পারবেন, কারণ যখন অপরাধের খবরে প্রোগ্রাম গ্রুপ ও তুলনা করার গ্রুপ উভয়ই প্রভাবিত হয়, তখন শুধুমাত্র প্রোগ্রাম গ্রুপই আপনার ইন্টারভেনশনের প্রভাব প্রদর্শন করবে। নিচের ভিডিওতে তুলনা করার গ্রুপগুলোর ব্যাপারে আরও জানুন,

তুলনা করার গ্রুপগুলো যেভাবে কাজ করে

2. আপনার ডাটা সংগ্রহ করুন

আপনি দুই ধরনের গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন: গুণবাচক (Qualitative) এবং সংখ্যাত্মক (Quantitative) পদ্ধতি।

গুণবাচক পদ্ধতিগুলোর উদ্দেশ্য হলোকেনো  আপনার কর্মসূচির উদ্দেশ্য অর্জন করেছে বা করেনি সেটি বুঝা। উদাহরণস্বরূপ, আপনি সময়ের ব্যবধানে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যবহৃত ভাষা বিশ্লেষণ করতে পারেন বা আপনি কোনো ফেসবুক গ্রুপে পোস্টকারী লোকজনের সাক্ষাৎকার নিতে পারেন এবং আপনার কর্মসূচির বিষয়ে তারা কী ভাবছেন তা জানতে চাইতে পারেন।

সংখ্যাত্মক পদ্ধতিগুলো আপনার প্রোগ্রামটি কী পরিবর্তন সাধন করেছে সেটিকে সংখ্যায় রূপান্তর করে (যেমন আপনার ওজনকে কেজিতে পরিমাপ করার মতো)। উদাহরণস্বরূপ, আপনি অসহিষ্ণু ফেসবুক পোস্টগুলোর লাইক এবং শেয়ার সংখ্যা হিসেব করতে পারেন। অথবা আপনি যে ফেসবুক গ্রুপের ব্যবহারকারীদের উপর আপনার গবেষণাটি পরিচালনা করছেন তাদের লেখা প্রতিটি বাক্যকে ১ থেকে ১০ স্কেলে স্কোর দিতে পারেন, যেখানে ১ = সর্বোচ্চ অসহিষ্ণুতার স্তর এবং ১০ = সর্বোচ্চ সহনশীলতার স্তর প্রকাশ করবে। পাশাপাশি, আপনি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের একটি বিশাল গ্রুপের মধ্যে প্রশ্নপত্র ব্যবহার করে ডেটা সংগ্রহ করতে পারেন এবং তাদের সহনশীলতার মাত্রা মূল্যায়ন করতে পারেন।

যখন আপনি কোনো অনলাইন ক্যাম্পেইনের প্রভাব মূল্যায়ন করছেন, তখন যতটা সম্ভব বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ: 

1. আপনার সাধ্যমত অনলাইন প্রভাবের সকল মেট্রিক সংগ্রহ করুন। সর্বাধিক মৌলিক মেট্রিকসমূহ হল:

  • ইমপ্রেশন (একটি পোস্ট কতবার প্রদর্শিত হয়েছে সেই সংখ্যা)
  • রিচ (কতজন মানুষ একটি পোস্টের ইমপ্রেশন পেয়েছেন তার সংখ্যা)
  • সম্পৃক্ততা (কোনো পোস্টে থাকা লাইক, ক্লিক, অথবা মন্তব্য)

2. প্রকৃত মানুষদেরকে জিজ্ঞাসা করুন তারা আপনার ক্যাম্পেইন সম্বন্ধে কী ভাবেন (উদা. আপনার ভিডিও), মাধ্যম হলো:

  • অডিয়েন্সের/শ্রোতা/দর্শকদের সদস্যদের নিয়ে একটি অনলাইন প্রশ্নপত্র (উদা. আপনি যেই Facebook গ্রুপে আপনার ভিডিও পোস্ট করেছেন সেই গ্রুপের সদস্যগণ)
  • একক সাক্ষাৎকার অথবা আপনার অডিয়েন্সের সদস্যদের নিয়ে ফোকাস গ্রুপ (সামনাসামনি অথবা অনলাইন)

পরামর্শ

আপনার অডিয়েন্সের সদস্যদের কাছে আপনার অ্যাক্সেস না থাকলে, যারা তাদের সমতূল্য (বয়স, লিঙ্গ, রাজনৈতিক মনোভাব এর ভিত্তিতে) আপনি তাদের বাছাই করতে পারেন এবং তাদেরকে আপনার ভিডিও দেখার জন্য বলতে পারেন ও তারপর একটি প্রশ্নপত্র সম্পন্ন করতে অথবা একটি ফোকাস গ্রুপে বা একক সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করতে বলতে পারেন।

বিভিন্ন পদ্ধতি একত্রিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ পর্যবেক্ষণযোগ্য অনলাইন আচরণ সম্পূর্ণরুপে অথবা ধারাবাহিকভাবে মানুষের প্রকৃত মতামত প্রতিফলিত করে না। উদাহরণস্বরুপ, আপনি যখন ভিউ ও শেয়ার গুনছেন, তখন আপনি জানেন না যে মানুষজন একটি ভিডিও শেয়ার করে কারণ তারা এটা পছন্দ করে, তারা এটা অপছন্দ করে, অথবা কারণ তারা বিরক্ত। প্রকৃতপক্ষে চেনার একটাই উপায় হলো তারা কি ভাবে সেটি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা।

এছাড়াও মুল্যায়ন পরিচালনা করার সাথে জড়িত নৈতিক বিবেচনা রয়েছে। আরও জানতে এই সংক্ষিপ্ত ভিডিওটি দেখুন।

কোনো ক্ষতি না করার মূল্যায়নের টিপস

3. আপনার ডাটা বিশ্লেষণ করুন

একবার আপনার ডাটা সংগ্রহ করা হয়ে গেলে, আপনাকে ডাটাটি বিশ্লেষণ করতে হবে। সাক্ষাৎকার ও ফোকাস গ্রুপ ডাটা বিশ্লেষণ করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্যে পুনরাবৃত্তিমূলক থিমগুলো শনাক্ত করা। থিমগুলো হলো পুনরাবৃত্তিমূলক বাক্য, আইডিয়া, অথবা অনুভূতি।  তারপর তুলনা করার গ্রুপের সাথে আপনার অংশগ্রহণকারী গ্রুপের ডাটাগুলোতে প্রাপ্ত থিমগুলো আপনি তুলনা করতে পারেন। প্রোগ্রাম মূল্যায়নের জন্য ডাটা বিশ্লেষণ করার স্টেপ-বাই-স্টেপ নির্দেশনাগুলো এখানে দেয়া হলো

4. আপনার ফলাফল উপস্থাপন করুন


আপনি যেভাবে আশা করেছিলেন সেভাবে প্রোগ্রামটি সফল নাকি ব্যর্থ সেটি ব্যাপার না, বরং যেকোনো ফলাফলই বৈধ এবং উপকারি। আপনার মূল্যায়নের ফলাফল উপস্থাপন করার সময় সৎ ও স্বচ্ছ থাকুন। কোনো প্রোগ্রামের সফলতা কমিউনিকেট করা ও যেসব ফলাফল না, অথবা নেতিবাচক প্রভাব দেখায় সেগুলোকে এড়িয়ে চলার উদ্দেশ্যে, ভুল ডাটা উপস্থাপন করা বা খারাপ ফলাফল ঢেকে দেওয়াটা চিন্তাকর্ষক হতে পারে। আমরা কঠোরভাবে স্বচ্ছতা ও সততার পরামর্শ দিয়ে থাকি: ফলাফল যখন দেখায় যে একটি প্রোগ্রাম সফল এবং যখন দেখায় যে একটি প্রোগ্রাম সফল হয়নি, উভয় ক্ষেত্রেই মুল্যায়ন বেশ উপকারি। 
ভালো মূল্যায়ন রিপোর্টের সহায়ক উদাহরণ এখানে পাওয়া যেতে পারে:

অবদান রেখেছেন Professor Greg Barton এবং Dr Matteo Vergani, Alfred Deakin Institute for Citizenship and Globalisation, Deakin University

ফেসবুকের মাধ্যমে আমাদের কমিউনিটির সাথে যুক্ত থাকুন

সক্রিয় থাকুন এবং আমাদের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে আমাদের বৃহত্তর কমিউনিটির সাথে যুক্ত থাকুন।

Go to Facebook