কীভাবে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করতে হয়
হ্যাশট্যাগ সম্পর্কে জানুন: এগুলো কী এবং কীভাবে এগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার করা যায়।
যখন কোনো কীওয়ার্ড, বিষয়, বার্তা বা নামের আগে এই # পাউন্ড প্রতীকটি ব্যবহার করা হয় তখন একে হ্যাশট্যাগ বলা হয়। এটি প্রাসঙ্গিক কোনো তথ্যে ট্যাগ দিতে, শ্রেণিভুক্ত করতে এবং গ্রুপে বিভক্ত করতে ব্যবহার করা হয়।
যদি আপনি কোনো হ্যাশট্যাগে ক্লিক করেন তাহলে সেই হ্যাশট্যাগের সাথে সম্পর্কিত ইন্টারনেটে সার্বজনীন যত তথ্য আছে তা সব প্রদর্শন করবে। আপনি যদি কোনো হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেন তবে আপনার পোস্টটি সেই হ্যাশট্যাগ অনুসন্ধানকারী লোকদের ফিডে প্রদর্শিত হবে।
যদি কোনো একটি হ্যাশট্যাগটি লোকজন প্রচুর ব্যবহার করতে থাকে তখন এটি একটি ট্রেন্ডিং বিষয়ে পরিণত হয়।
হ্যাশট্যাগ মূলত Internet Relay Chat (IRC) সম্পর্কিত বার্তা এবং তথ্য শ্রেণিভুক্ত করতে ব্যবহৃত হত। তারপর ২০০৭ সালে টুইটার সেগুলো ব্যবহার শুরু করে এবং এর পর থেকে এর ব্যবহার সোশ্যাল মিডিয়ার প্রায় সব ক্ষেত্রে এমনকি আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন এখন কথায় জোর দিতে, বিদ্রূপ প্রকাশের জন্য, টপিক চেঞ্জার হিসাবে বা অভিবাদন (যেমন “হ্যাশট্যাগ!”) রূপেও মৌখিক হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে থাকে। মানুষ হাতের মাধ্যমেও হ্যাশট্যাগ প্রকাশ করে!
কোন বিষয়, উৎসব, দুর্যোগ, জনপ্রিয় সংস্কৃতি এবং থিম ইভেন্ট সম্পর্কে লোকজনকে একত্র করতে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে।
#Divali
#PrayForParis
#WorldTeacherDay
#MarketingMonday
#ThrowbackThursday
#Covid19 #WFH
#VaccineEquity
হ্যাশট্যাগের সক্রিয়তা
এই পরিভাষাটি কোনো ইস্যু নিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের একত্রিত করার জন্য হ্যাশট্যাগের ব্যবহারকে বোঝায়। কোনো নির্দিষ্ট হ্যাশট্যাগ মানুষ যত বেশি ব্যবহার করে আন্দোলনটি ততো বড় হয়। #OccupyWallStreet, #MeToo, এবং #BlackLivesMatter এর মতো আন্দোলন যেগুলো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিল সেখানে অংশগ্রহণকারীদের একত্রিত ও সমন্বিত করার জন্য এর ব্যবহার করা হয়েছে।
যেসব ক্ষেত্রে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা যায়:
- আপনার কনটেন্টটি সবার কাছে অনুসন্ধানযোগ্য করে তোলার জন্য।
- নতুন ফলোয়ারদের আকর্ষণ করার জন্য।
- আপনার বর্তমান অডিয়েন্সকে সম্পৃক্ত করার জন্য।
- ক্যাম্পেইন হ্যাশট্যাগ (যেমন #freetheparrot) ব্যবহার করে মূল সমস্যাগুলো হাইলাইট করার জন্য।
- সামাজিক সমস্যাগুলো নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে ও সহায়তা প্রদর্শন করার জন্য (যেমন #InternationalWomensDay)।
- আপনার পোস্টে কোন প্রসঙ্গ যোগ করার জন্য।
- আপনার পোস্টগুলো সাজাতে সাহায্য করার জন্য।
হ্যাশট্যাগের ত্বরিত প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো হলো
১. # দিয়ে শুরু করেন।
২. কোনো ফাঁকা জায়গা না রেখে বা যতি চিহ্ন ব্যবহার না করে, শুধুমাত্র টেক্সট ব্যবহার করুন।
৩. এগুলোকে সংক্ষিপ্ত এবং মনে রাখার মতো করে তৈরি করুন: যেমন #hashtagsthataretoolong এটা পড়া ও মনে রাখা কঠিন।
৪. বানান চেক করুন, নাহলে আপনি যে ওয়ালে চান সে ওয়ালে আপনার কনটেন্ট নাও যেতে পারে।
৫. প্রাসঙ্গিক এবং নির্দিষ্ট হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন যেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অন্যান্য ব্যবহারকারীরা যাদের সাথে আপনি সংযুক্ত হতে চান তারা ব্যবহার করে থাকে।
৬. পোস্ট, ছবির ক্যাপশন, ভিডিওর টাইটেলে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন। অন্যান্যরা এগুলো কীভাবে ব্যবহার করে থাকে সেটাও খুঁজে দেখুন।
৭. আপনার হ্যাশট্যাগগুলো ক্লিক করার যোগ্য হিসেবে তৈরি করুন যেন সেগুলো ইনডেক্সড হয় ও অনুসন্ধানের করলে ফলাফলে প্রদর্শিত হয়।
৮. আপনার অ্যাকাউন্টগুলো যেন পাবলিক হয় তা নিশ্চিত করুন, অন্যথায় শুধুমাত্র আপনার ফলোয়ারারাই আপনার হ্যাশট্যাগ করা কনটেন্টগুলো দেখতে পারবেন।
৯. সংখ্যা নয় গুণমান: কখন ও কিভাবে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করবেন সেটা নির্দিষ্ট করুন। বার বার ব্যবহার করলে হিতে বিপরীত হতে পারে, আপনার পোস্টটি পড়তে কঠিন হতে পারে এবং আপনার কনটেন্ট ছড়িয়ে পড়ার বদলে সংকীর্ণ হয়ে যেতে পারে।
বিভিন্ন নেটওয়ার্কে হ্যাশট্যাগ সম্পর্কে আপনার যা যা জানা প্রয়োজন
টুইটার
টুইটারে একটি “Trending Hashtags” ফাংশন রয়েছে এবং আপনার অঞ্চলে কোন হ্যাশট্যাগগুলো জনপ্রিয় তা আপনাকে দেখার জন্য অবস্থান অনুসারে সেগুলোকে বিভক্ত করতে পারে। কোন হ্যাশট্যাগটি ব্যবহার করতে হবে এবং নতুন কোনটি তৈরি করতে হবে সে ব্যাপারেও এটি সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক হতে পারে।
ফেসবুক
ফেসবুকে সমস্ত কনটেন্ট পাবলিক নয়। অনেক মানুষ তাদের পেজগুলোকে প্রাইভেট বা ব্যক্তিগত রাখতে পছন্দ করেন; সুতরাং, প্রদর্শিত হ্যাশট্যাগগুলো ব্র্যান্ড এবং বিভিন্ন ইনফ্লুয়েন্সারের হতে পারে। আপনার ব্যক্তিগত ফেসবুক গ্রুপের হ্যাশট্যাগগুলো ব্যবহার করার একটি উপায় হল আপনার সকল ফলোয়ারদেরকে অন্যত্র যে কোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে তাদের পাবলিক অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট হ্যাশট্যাগগুলো ব্যবহার করতে অনুরোধ করা।
ইনস্টাগ্রাম
আপনি যখন একটি # টাইপ করবেন, জনপ্রিয় হ্যাশট্যাগগুলো এবং সেগুলোর পোস্ট সংখ্যাসহ একটি স্বয়ংক্রিয় পপ আপ মেনু প্রদর্শিত হবে। আপনার হ্যাশট্যাগগুলো যত বেশি অনন্য হবে, সেগুলোতে পোস্ট সংখ্যা তত কম হবে।
হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে যুক্ত হোন
হ্যাশট্যাগ আপনাকে প্রাসঙ্গিক কিন্তু বৃহত্তর, এমনকি বৈশ্বিক আলাপ আলোচনার অংশ হওয়ার সুযোগ প্রদান করবে। জনপ্রিয় হ্যাশট্যাগগুলোর উপর চোখ রাখুন যাতে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারেন। আপনার শ্রোতাদের নিকট আরো বিভিন্ন সমস্যা এবং কনটেন্ট তুলে ধরার মাধ্যমে তাদেরকে কোনো বিষয়ে ওয়াকিবহাল করার জন্য আপনি এগুলো ব্যবহার করতে পারেন বা আপনি আপনার সংস্থাটিকে অনুরূপ সংস্থাগুলোর সাথে সংযুক্ত করা এবং বৃহত্তর জোট তৈরি করতে পারেন। স্থানীয় সংস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট হ্যাশট্যাগগুলো নিকটস্থ মিত্রদের খুঁজে পেতে পারে। awareness days-এর মতো জনপ্রিয় গ্লোবাল হ্যাশট্যাগগুলো আপনাকে বৃহত্তর আলোচনায় যুক্ত করবে।
আপনার হ্যাশট্যাগের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করুন
আপনি সোশ্যাল মিডিয়াতে/সামাজিক মাধ্যমে আপনার অন্যান্য কর্মসূচির সফলতা যেভাবে পরিমাপ করেন, হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করার পর আপনার পোস্টগুলো কেমন পারফর্ম করছে সেদিকে নজর রাখুন। হ্যাশট্যাগ সহ পোস্ট আর হ্যাশট্যাগবিহীন পোস্টের পারফরম্যান্সে কি কোনো পার্থক্য রয়েছে? হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করলে কি অধিক ফলোয়ার, লাইক এবং মন্তব্য পাওয়া যায়? আপনার অ্যাকাউন্টের জন্য কোন হ্যাশট্যাগগুলো সবচেয়ে ভাল কাজ করে?
কৌশলগতভাবে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে আপনি আপনার যোগাযোগকে অনেক বেশি ছড়িয়ে দিতে পারেন এবং আপনার বার্তাগুলোর প্রভাব বৃদ্ধি করতে পারেন।